[আই সি টি-একাদশ দ্বাদশ শ্রেনি ]৩য় অধ্যায়ঃ সংখ্যা পদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিভাইস [পর্ব-২]
গত পর্বে আলোচনা করেছিলাম সংখ্যা পদ্ধতি, পজিশনাল ও নন পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে। আজকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। অর্থাৎ পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির স্ট্রাকচার, পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষেত্রে স্থানীয় মানের গুরুত্ব, পজিশন অনুযায়ী অংকের মান কিভাবে নির্ধারিত হয়, তার ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
[ গত পর্বের পর ]
আজকের পর্বে থাকছেঃ
- সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি (Base)
- স্থানীয় মান
সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি (Base )
সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি বা বেজ হচ্ছে ঐ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মোট ইউনিক (অনন্য) অংক বা চিহ্ন সমূহের সংখ্যা । পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি বা বেজ n হলে, ০ (শূন্য) সহ মোট n টি ইউনিক চিহ্ন ব্যবহৃত হয় । ভিত্তি বা বেজের উপর নির্ভর করে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে । যথাঃ- দশমিক বা ১০ ভিত্তিক ( Decimal )
- বাইনারি বা দুই ভিত্তক (Binary )
- অক্ট্যাল বা আট ভিত্তিক ( Octal )
- হেক্সা ডেসিমেল বা ১৬ ভিত্তিক ( Hexadecimal )
পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে স্থানীয় মান
পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষেত্রে স্থানীয় মানের গুরুত্ব: এক অংকের কোন সংখ্যার মান জানার ক্ষেত্রে স্থানীয় মান জানা ততটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও দুই বা ততোধিক অংকের সংখ্যার মান জানার জন্য স্থানীয় মান জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার । যেমন (দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে) ২ এর মান ২ (এক অংকের সংখ্যা), এখানে ২ একটি অংক এবং সংখ্যাও বটে। আবার ২৩ এ (দুই অংকের সংখ্যা) ২ - দশক এর ঘরে আছে তাই এখানে ২ এর মান ২০। অংক হলো কোনো সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলিত প্রতীক বা চিহ্ন, আর ঐ সকল প্রতীক দিয়ে সংখ্যা গঠন করা হয়। [গত পোষ্টে বিস্তারিত দেখুন]
তাই একই অংক দিয়ে গঠিত সংখ্যায় অংক সমূহের অবস্থানের উপর নির্ভর করে মানের পরিবর্তন হতে পারে। উদাহরন স্বরূপঃ আমাদের প্রচলিত সংখ্যা পদ্ধতি অর্থাৎ দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির দু'টি সংখ্যা "৪৫৬" ও" ৫৬৪"। সংখ্যা দু'টি একই অংক অর্থাৎ "৪", "৫", "৬" নিয়ে গঠিত।
এখন, প্রথম সংখ্যাটিতে "৬" ১ম বা এককের ঘরে, "৫" ২য় বা দশকের ঘরে ও এবং "৪" ৩য় বা শতকের ঘরে । অন্যদিকে ২য় সংখ্যাটিতে "৪" ১ম বা এককের ঘরে, "৬" ২য় বা দশকের ঘরে ও এবং "৫" ৩য় বা শতকের ঘরে । এখানে,সংখ্যা দু'টির মধ্যে ২য় সংখ্যাটির সর্বোচ্চ গুরুত্বের অংক ১ম সংখ্যাটির সর্বোচ্চ গুরুত্বের অংকের চেয়ে বেশি তাই ২য় সংখ্যাটি তুলনামূলক ভাবে বড় । অর্থাৎ সংখ্যা দু'টির স্থানীয় মানের প্রভাবে সংখ্যার মোট মানের উপর প্রভাব ফেলেছে । নিম্নে সংখ্যা দু'টিকে গাণিতিকভাবে প্রকাশ করা হলঃ
৪৫৬=৪*১০০+৫*১০+৬*১
বা,৪৫৬=৪*১০২+৫*১০১+৬*১০০
এবং,
৫৬৪=৫*১০০+৬*১০+৪*১
বা,৫৬৪=৫*১০২+৬*১০১+৪*১০০
উপরের উদাহরন দু'টিতে সমান চিহ্নের বাম পাশের সংখ্যাটি হল দশমিক মান এবং ডান পাশের সংখ্যাটি হল সংখ্যাটির বিশ্লেষিত গাণিতিক রূপ । উল্লেখ্য, দশমিক হতে সংখ্যাটির যত বামে যেতে থাকবে, সংখ্যার ভিত্তির ঘাত (পাওয়ার) তত বৃদ্ধি পাবে (ক্রমানুসারে)। অর্থাৎ,
কোন সংখ্যার র্যাডিক্স পয়েন্টের বামের সংখ্যার মান = k*np-১+k*np-১+k*np-১+.............[সর্বোচ্চ গুরুত্বের সংখ্যা পর্যন্ত]
এবং র্যাডিক্স পয়েন্টের ডানে সংখ্যার মান হবে,
k*n-p+k*n-p+k*n-p+................[সর্বনিম্ন গুরুত্বর অংক পর্যন্ত]
এখানে,
k = অংকের নিজস্ব মান,
n = ভিত্তি,
p = অবস্থান।
n = ভিত্তি,
p = অবস্থান।
সহজ ভাষায় র্যাডিক্স পয়েন্ট হলো দশমিক বা পয়েন্ট [গত পোষ্টে বিস্তারিত দেখুন]
[নোটঃ র্যাডিক্স পয়েন্টের বাম পাশে সংখ্যার p - এর মান এবং ডান পাশের সংখ্যার p - এর মান ১ থেকে শুরু হবে । এভাবে যেকোন পজিশনাল সংখ্যার মান নির্ণয় করা যায়]
সারসংক্ষেপ
একনজরে দেখে নিন যা যা ছিলো আজকের পোষ্টে
আগামী পর্বে থাকছেঃ
- দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (Decimal )
- বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ( Binary )
- অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি ( Octal )
- হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি ( Hexadecimal )
নিজে করো
আমাদের হাতে ১০ টি আঙ্গুল বলে আমরা দৈনন্দিন জীবনে দশ ভিত্তিক সংখ্যা ব্যবহার করে থাকি। হাজার আলোক বর্ষ দূরে বসবাসরত (কাল্পনিক) উন্নত কাল্পনিক প্রাণীরাও তাদের হাতের আঙ্গুল সংখ্যক ভিত্তি ব্যবহার করে। আমাদের সংখ্যা পদ্ধতির ৮৪৩ তাদের সংখ্যা পদ্ধতির ৪৪৩ বুঝায়প্রশ্নঃ তাদের হাতের মোট অঙ্গুল কয়টি। (রেফারেন্স - নিউরনে আবারও অনুরণন)
এখানে, (৮৪৩)১০ = (৪৪৩)n
বা, ৮৪৩ = ৪*n২ + ৪*n১ + ৩*n০
বা, ৮৪৩ = ৪*n২ + ৪*n + ৩ [a১ = a, a০ = ১]
বা, ৮৪০= ৪*n২ + ৪*n
বা, ২১০ = n২ + n
বা, n২ + n - ২১০ = ০
বা, n২ + ১৪*n - ১৫*n - ২১০ = ০
বা, n (n+১৪) - ১৫ (n+১৪) = ০
বা, (n+১৪) (n-১৫) = ০
বা, n = ১৪, -১৫
উত্তরঃ ১৪ টি আঙ্গুল (যেহেতু আঙ্গুলের সংখ্যা ঋণাত্মক হতে পারে না)
পোস্টটি কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের লিখা টিউটোরিয়াল আমাদের ব্লগে পাবলিশ করতে আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করুন।