[আই সি টি-একাদশ দ্বাদশ শ্রেনি ] ৩য় অধ্যায়ঃ সংখ্যা পদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিভাইস [পর্ব-১]

সংখ্যা পদ্ধতি

বন্ধুরা,আজকে আমি আলোচনা করতে যাচ্ছি সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনির শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি অধ্যায়।

সাধারণত এই অধ্যায় থেকে ২টি সৃজনশীল নিশ্চিতভাবে আসে, এবং বেশ কিছু এমসিকিউও আসে। তাই আইসিটি-তে এ প্লাস নিশ্চিত করতে এই অধ্যায় ভালো ভাবে আয়ত্তে রাখতে হবে। এছাড়াও সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী যেকোনো শিক্ষার্থীদের জন্য পোস্টটি সহায়ক হবে বলে আসা করি।

আজকের পর্বে যা যা থাকছেঃ

আপনাদের বুঝার ও মনে রাখার সুবিধার্থে বিষয় বস্তু ছোটো ছোটো কয়েকটি পর্বে প্রকাশ করতে যাচ্ছি। আজ প্রথম পর্বে থাকছে-
  • সংখ্যা পদ্ধতি কি?
  • সংখ্যা পদ্ধতির প্রকারভেদ
  • নন পজিশনাল ও পজিশনাল সংখ্যা বলতে কি বুঝায়?

সংখ্যা পদ্ধতি কি?

সংখ্যা তৈরির বিভিন্ন প্রতীক হচ্ছে অংক। কোন সংখ্যা প্রকাশ করার পদ্ধতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে। আমরা যে সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করি তা হচ্ছে ডেসিমেল (Decimal ) বা দশ ভিত্তিক সংখ্যা ,আবার কম্পিউটার যে পদ্ধতি ব্যবহার করে তা হচ্ছে বাইনারি ( Binary ) বা দুই ভিত্তিক সংখ্যা। কোন সংখ্যা পদ্ধতি কত ভিত্তিক তা নির্ভর করে ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট কতটি অংক বা চিহ্ন রয়েছে। তবে ভিত্তিহীন সংখ্যা পদ্ধতি হলে আলাদা কথা।

সংখ্যা পদ্ধতির প্রকারভেদ

সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত মানব সভ্যতায় যে সকল সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলন হয়েছে তাদেরকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে
যথা- ১. ভিত্তিহীন বা নন পজিশনাল (Non Positional Number )
২. ভিত্তিক বা পজিশনাল (Positional Number )

ভিত্তহীন বা নন পজিশনাল সংখ্যা

নন পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি একটি পুরানো পদ্ধতি । আধুনিক কালে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে । নন পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে অংক গুলোর স্থানীয় মান থাকে না । অর্থাৎ সংখ্যার মধ্যে ব্যবহৃত অংকগুলো কোন অবস্থানে আছে তা সংখ্যার মানে কোন প্রভাব ফেলতে পারে না । যেমন - রোমান সংখ্যা। উদাহরণস্বরূপ, রোমান সংখ্যা পদ্ধতিতে i দ্বারা ১ বুঝানো হয়। এবং ii দ্বারা ১১ না বুঝিয়ে ১+১ = ২ বুঝানো হয়। রোমান সংখ্যা পদ্ধতিতে বড় অংককে ভিত্তি করে গণনা করা হয়। যেমন v দ্বারা ৫ বুঝানো হয়, আর i দ্বারা ১। এখন v (বড় অংক) এর ডান পাশে i (ছোটো কোনো অংক) বসালে তা যোগ এবং বাম পাশে বসালে তা বড় অংক হতে বিয়োগ করা হবে । অর্থাৎ vi = ৬ ও iv = ৪ বুঝায়।

ভিত্তিক বা পজিশনাল সংখ্যা

বহুল প্রচলিত সংখ্যা পদ্ধতি হল পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি। আমরা দৈনন্দিন জিবনে সব ধরনের মান, পরিমাপ এই পদ্ধতিতে প্রকাশ করে থাকি। এ সংখ্যা পদ্ধতিতে অংকগুলোর মান স্থানের উপর নির্ভর করে। ভিত্তিক বা পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে কোন সংখ্যার মান বের করতে হলে যা যা প্রয়োজনঃ
  • সংখ্যায় ব্যবহৃত অংক বা অংকগুলোর নিজস্ব মান
  • সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি
  • অংকগুলোর স্থানীয় মান
সংখ্যায় ব্যবহৃত অংকগুলোর মান হলো এককভাবে অংকগুলোর মান, যেমন : হেক্সাডেসিমেল বা ষোলো ভিত্তিক সংখ্যায় A=11, B=12 বুঝায়। ভিত্তি হলো সংখ্যা পদ্ধতিতে কত গুলো অংক বা চিহ্ন রয়েছে তার মোট সংখ্যা, যেমন বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত অংকগুলো হলো ০ ও ১ অর্থাৎ ২টি অংক। তাই বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি । এছাড়াও স্থানের উপর অংকের মান নির্ভর করে। স্থানীয় মান বাড়লে অংকের মান বাড়ে, আর স্থানীয় মান কমলে অংকের মানও কমে। যেহেতু ব্যাপারটি অনেকের কাছে জটিল মনে হতে পারে তাই এই ব্যাপারে সামনের পোস্টে আরও বিস্তারিত তুলে ধরব।
পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে র‍্যাডিক্স ( Radix ) পয়েন্ট দ্বারা সংখ্যাকে পূর্ণসংখ্যা ( Integer ) ও ভগ্নাংশ ( Fraction ) এই দুই অংশে ভাগ করা হয় ।
উদাহরন স্বরূপঃ ৩৬৬৪.৫৭৪৪ এই সংখ্যাতে র‍্যাডিক্স পয়েন্টের ( . - দশমিক চিহ্ন) বাম পাশে পূর্ণসংখ্যা (৩৬৬৪) এবং ডান দিকে ভগ্নাংশ (৫৭৪৪) । র‍্যাডিক্স পয়েন্ট থেকে সংখ্যাটির সবচেয়ে বামে যে সংখ্যাটি থাকবে সেটি হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সংখ্যা (MSB - Most Significant Bit) এবং র‍্যাডিক্স পয়েন্ট থেকে সবচেয়ে ডানে অবস্থানকারী সংখ্যাটি হচ্ছে সর্বনিম্ন গুরুত্বর সংখ্যা (LSB - Least Significant Bit) ।
উপরের উদাহরনটিতে হচ্ছে সর্বোচ্চ এবং হচ্ছে সর্বনিম্ন গুরুত্বেব অংক ।

আগামী পর্বে পজিশনাল বা ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতির মান কিভাবে গণনা করা হয় তা নিয়ে আলোচনা করবো।

আগামী পর্বে থাকছেঃ
  • সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি (Base) ও
  • স্থানীয় মান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

আগামী পর্বটি পড়তে পারবেন এখান থেকে
পোস্টটি কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের লিখা টিউটোরিয়াল আমাদের ব্লগে পাবলিশ করতে আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করুন।
পরবর্তী পোষ্ট
মন্তব্য নেই
মন্তব্য করুন
comment url